Tuesday, 23 January 2024

118th URS MUBARAK - MAIZBHANDAR SHARIF


118th Urs Festival of The great founder of Maizbhandar Silsila, Gausul Azam Hazrat Maulana ShahSufi SYED AHMED ULLAH SHAH Maizbhandari (Q.S.A.) will be held at. MAIZBHANDAR DARBAR SHARIF, Fatikchari, Chattogram, Bangladesh. on 10 Magh 1430, 24 January 2024. You Are Warmly Invited!



#10Magh 1430
#24January 2024
#URS #HolyUrsMubarak
#UrsSharif #UrsMubarak
#Maizbhandar #Maizbhander
#MaizbhandarSharif






#Chittagong #Bangladesh

#SufiMedia #SufiCentre #SufiOrder #SufiWorld #SufiLive #GlobalSufiServices
 #GlobalSufiMedia #Tasawwuf #Sufism #Islam

আজ মহান ১০ মাঘ ১৪৩০ বাংলা, ২৪ জানুয়ারী ২০২৪ ইংরেজি।

আজ উপমহাদেশের প্রখ্যাত পীরে কামেল, মাইজভান্ডারী ত্বরিকার মহান প্রবর্তক, হযরত গাউছুল আজম সৈয়দ আহমদ উল্লাহ শাহ মাইজভান্ডারী (ক.) প্রকাশ হযরত কেবলায়ে কাবা’র ১১৮তম পবিত্র বার্ষিক ওরছ শরীফ।

হযরত কেবলা কাবা ১৮২৬ সালে ১৪ জানুয়ারী (১ম মাঘ, ১২৩৩ বাংলা সন) চট্টগ্রাম শহর হতে ৪০ কিলোমিটার উত্তরে তৎকালীন প্রত্যন্ত মাইজভান্ডার গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন।তার পিতার নাম সৈয়দ মতিউল্লাহ মাইজভান্ডারী ও মাতার নাম সৈয়দা খায়রুন্নেছা। তার পারিবারিক নাম ছিল সৈয়দ আহমদ উল্লাহ। তিনি ২৩ জানুয়ারী ১৯০৬ সালে ওফাত লাভ করেন। তাঁর পুর্ব পুরুষ সৈয়দ হামিদ উদ্দিন, গৌড়নগরে ইমাম এবং কাজীর পদে নিয়োজিত ছিলেন। তিনি গৌড় নগরে মহামারীর কারণে ১৫৭৫ সনে চট্রগ্রামের পটিয়া থানার কাঞ্চন নগরে বসতি স্হাপন করেন; সেখানে তার নামানুসারে হামিদ গাঁও নামে একটি গ্রাম আছে। তার এক পু্ত্র সৈয়দ আব্দুল কাদের ফটিকছড়ি থানার আজিমনগর গ্রা্মে ইমামতি উপলক্ষে এসে বসতি স্হাপন করেন। তার পুত্র সৈয়দ আতাউল্লাহ তৎ পুত্র সৈয়দ তৈয়বুল্লাহর মেজ় পুত্র সৈয়দ মতিউল্লাহ মাইজভাণ্ডার গ্রামে এসে বসতি স্হাপন করেন।

হযরত কেবলায়ে আলম নিজ গ্রামের মক্তবের পড়ালেখা শেষ করার পর ১২৬০ হিজরীতে উচ্চ শিক্ষার্জনের উদ্দেশ্যে কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি হন। তিনি ১২৬৮ হিজরীতে বিশেষ কৃতিত্বের সাথে পরীক্ষায় পাশ করেন। সেখানেই তিনি তৎকালীন সর্বোচ্চ পর্যায়ের শিক্ষা সমাপন করে ধর্মীয় নানা অনুষ্ঠানাদিতে আমন্ত্রিত অতিথি বা বক্তা হিসাবে যথেষ্ট সুনামের সাথে ধর্মীয় প্রচার-প্রচারণার কাজে লিপ্ত ছিলেন। তিনি শিক্ষা জীবন শেষে করে হিজরী ১২৬৯ সালে ব্রিটিশ শাসনাধীন অবিভক্ত ভারতের যশোর অঞ্চলেরবিচার বিভাগীয় কাজী পদে যোগদান করেন এবং একই সঙ্গে মুন্সেফী অধ্যায়ন শুরু করেন। পরবর্তিতে ১২৭০ হিজরীতে কাজী পদে ইস্তফা দিয়ে তিনি কলিকাতায় মুন্সী বু আলী মাদ্রাসায় প্রধান মোদাররেছ হিসাবে যোগদান করেন। পরবর্তি সময়ে মুন্সেফী পরীক্ষায় ও তিনি প্রথম স্থান অধিকার করে ছিলেন। তিনি হাদিস, তাফসির, ফিকহ, মন্তেক, হিকমত, বালাগত, উছুল, আকায়েদ, ফিলছফা, ফারায়েজ সহ যাবতীয় বিষয়ে অত্যন্ত অভিজ্ঞ ছিলেন। আরবী, উর্দু, বাংলা ও ফারসি ভাষায় তিনি বিশেষ পারদর্শী ছিলেন। তৎকালীন সময়ে ওয়ায়েজ এবং বক্তা হিসাবে তার নামডাক বিশেষ ভাবে ছডিয়ে পড়ে। অল্প কিছু দিন পরই তিনি আধ্যাত্মিক জীবন যাপনে আত্ম নিয়োগ করেন। তখন হতে তিনি বাকি জীবন একজন সুফি সাধক হিসাবে অতিবাহিত করেন।

সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভান্ডারী হযরত বড়পীর সৈয়দ আব্দুল কাদের জিলানী (কঃ)-এর বংশধর ও উক্ত তরিকার খেলাফত প্রাপ্ত সৈয়দ আবু শাহামা মুহাম্মদ ছালেহ আল কাদেরী লাহোরী (রঃ) নিকট বায়েত গ্রহনের মাধ্যমে বেলায়ত অর্জন করেন এবং সৈয়দ দেলওয়ার আলী পাকবাজ (রঃ) এর নিকট হতে এত্তাহাদী কুতুবিয়তের ক্ষমতা অর্জন করেন। তিনি দিনে দ্বীনি শিক্ষাদান ও রাতে এবাদত ও রেয়াজতের মাধ্যমে সময় কাটাতেন। এভাবে কঠোর সাধনার ফলে তিনি আধ্যাত্মিক জগতের সর্বোচ্চ বেলায়ত অর্জন করেছিলেন। তিনি জীবদ্দশায় তাঁর সুফি তরীকার দীক্ষা সমাজে মানুষের মাঝে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দিতে বহু সুফি প্রতিনিধি বা খলিফা নিয়োগ করেন বলে উল্লেখ রয়েছে। তন্মধ্যে ২০৪ খলিফার নাম ইতঃপূর্বে বেশ কয়েকটি প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক গণ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। 

আহমদ উল্লাহ মাইজভান্ডারী ১২৭৬ হিজরীতে ৩২ বছর বয়সে আজিম নগর নিবাসী মুন্সী সৈয়দ আফাজ উদ্দিন আহমদের কন্যা সৈয়দা আলফুন্নেছা বিবির সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। কিন্ত বিয়ের ছয় মাসের মাথায় তাঁর স্ত্রী মারা যান। সেই বছরই তিনি পুনরায় সৈয়দা লুৎফুন্নেছা বিবিকে বিয়ে করেন। ১২৭৮ হিজরী সালে তাঁর প্রথম মেয়ে সৈয়দা বদিউন্নেছা বিবি জন্মগ্রহন করেন। কিন্তু মেয়েটি চার বছর বয়সে মারা যায়। এরপর তাঁর আরোও একটি ছেলে জন্মগ্রহন করে অল্প দিনের মধ্যে মারা যান। অতঃপর ১২৮২ হিজরীতে দ্বিতীয় পুত্র সৈয়দ ফয়জুল হক (রঃ) এবং ১২৮৯ হিজরী সালে দ্বিতীয় কন্যা সৈয়দা আনোয়ারুন্নেছা জন্মগ্রহন করেন। তাঁর দ্বিতীয় পুত্রও পিতার পুর্বে ইন্তেকাল করেন।

হযরত গাউছুল আজম মাইজভান্ডারী (কঃ) তাঁর পীরে ত্বরিকতের নির্দেশে ১৮৫৭ সালে নিজ গ্রাম মাইজভান্ডারে ফিরে আসেন। আধ্যাত্মিক সাধক ও দোয়া প্রত্যাশীদের ভীড়ে এই সাধকের পবিত্র বাসগৃহ বিশ্ব মানবতার কল্যাণধারক এক উচ্চমার্গীয় আধ্যাত্মিক দরবারে পরিণত হয়। লোকসমাজে পরিচিতি পায়‘মাইজভান্ডার দরবার শরীফ’ হিসেবে। হযরত কেবলার (কঃ) অসংখ্যা কারামতের ঘটনা বিভিন্ন গ্রন্থে ও লোকমুখে প্রচারিত। যেমনঃ (১) হযরতে আধ্যাত্মিক প্রভাবে মোহছেনিয়া মাদ্‌রাসা প্রতিষ্ঠা ও মোদার্‌রেছ নিযুক্তি। (২) হযরতের আধ্যাত্মিক প্রভাবে এক রাতে মক্কা শরীফ হতে চট্টগ্রাম শহরে হাজীর প্রত্যাগমন। (৩) হযরতের বেলায়তী ক্ষমতায় বাহুতে হাত রেখে জনৈক হাজীর অলৌকিক ভাবে বাড়ীতে প্রত্যাবর্তন (৪) হযরতের আধ্যাত্মিক প্রভাবে বাঘের মুখে লোটা নিক্ষেপে ভক্ত উদ্ধার (৫) হযরতের বেলায়তী প্রভাবে মৃত্যূকালে আজরাইল ফেরত ও ষাট বৎসর আয়ু বৃদ্ধি। (৬) হযরতের আদেশে রেয়াজ উদ্দিন উকিলের ভূ-সম্পত্তি খরিদ ও রেয়াজ উদ্দিন বাজারের পত্তন। (৭) হযরতের আশ্চর্য্য কেরামতে বগলের নীচে কাবা শরীফে মুছল্লির প্রবেশ করতে দেখা -ইত্যাদি। এই ধরনের উচ্চমার্গীয় কেরামত গাউছে আজমিয়তের পরিচয় বহন করে। হযরত মুহিউদ্দীন ইবনুল আরাবীর ভবিষ্যৎবাণীঃ বিশিষ্ট ছুফী তাত্ত্বিক গবেষক ও বুযুর্গ হযরত মহিউদ্দীন ইবনুল আরাবী তাঁর ‘ফছুছুল হেকম’ গ্রন্থের ‘ফচ্ছে শীচি’ অধ্যায়ে হযরত গাউছুল আজম মওলানা সৈয়দ আহমদ উল্লাহ (কঃ) এঁর আগমণ ও তাঁর গাউছুল আজম হওয়ার ভবিষ্যৎবাণী করে গেছেন।
বিশ্ব মানবতায় বেলায়তের স্বরূপঃ হযরত আকদাছ (কঃ)’র বেলায়তের পরশ পেয়ে ধন্য হয়েছেন মাটিস্ত বুজুর্গানে দ্বীনন এবং তারা জামালী হতে জালালীর মধ্যে রূপ ধারণ করেছেন। কামালিয়তের বা বুজুর্গীর কোন প্রশংসা তাঁর বুজুর্গীতে বাদ পড়েনা। তিনি এমন এক খোদা -প্রদত্ত শ্রেষ্ঠত্ব সম্পন্ন অলি , যিনি খোদার ইচ্ছা শক্তিতে তাঁর গাউছে আজমিয়তের প্রভাবে জনগণের না হওয়ার মত কাম্য বস্তুকে হওয়ার রূপ দিয়েছেন এবং দিচ্ছেন। তাঁর সাথে হযরত খাজা খিজির (আঃ) এঁর খুবই ঘনিষ্ট আধ্যাত্মিক সম্পর্ক ছিল। সমসাময়িক ওলামায়ে কেরাম ও বুজুর্গগণ তাঁর প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাপূর্ণ উচ্চ ধারণা পোষন করতেন যা তাদের লিখিত কসিদা ,শের,কবিতা,মন্তব্য ইত্যাদি থেকে উপলদ্ধি করা যায়। তাঁর আধ্যাত্মিক পরশ প্রাপ্ত অসংখ্যা অলী-দরবেশ বিভিন্ন স্থানে আধ্যাত্মিকতার দাওয়াত পৌঁছে দিয়ে বিশ্ব মানবতার কল্যাণের অপূর্ব দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন।
উত্তরাধিকারী খলিফা নির্ধারণ ও গদী অর্পণঃ গাউছুল আজম হযরত মওলানা সৈয়দ আহমদ উল্লাহ (কঃ) তাঁর নশ্বর জীবনের শেষ দিকে এক জুমাবারে এলাকার সমাজপতি ও জনগণের উপস্থিতিতে তাঁর পবিত্র হুজুরা শরীফ দোয়ার মেহরাবে নিজ পুত্র বংশীয় আদরের নাতি সাজ্জাদানশীনে গাউছুল আজম হযরত মাওলানা শাহ্‌ ছুফী সৈয়দ দেলাওর হোসাইন মাইজভান্ডারী (কঃ) -কে নিজ গদী শরীফ অর্পণে স্থলাভিষিক্ত আধ্যাত্মিক উত্তরাধিকারী মনোনীত করেন।
ওফাত ও ওরশঃ গাউছুল আজম হযরত মওলানা সৈয়দ আহমদ উল্লাহ (কঃ) ৭৯ বছর বয়সে ২৩ জানুয়ারী ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দ ,১০ মাঘ ১৩১৩ বঙ্গাব্দ ,সোমবার দিবাগত রাতে ইহধাম ত্যাগ করেন। তাঁর ওফাত দিবস উপলক্ষে প্রতি বছর ৮,৯ ও ১০ মাঘ ৩ দিন ব্যাপী ওরশ শরীফ অনুষ্ঠিত হয়।

ইসলাম ধর্মে আধ্যাত্মিক সাধনার ধারাবাহিকতায় উনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে কোরান ও হাদীসের শিক্ষাকে অনুসরণ করে গাউছুল আজম হযরত মওলানা সৈয়দ আহমদ উল্লাহ (কঃ)-এঁর আধ্যাত্মিক শক্তি ও শিক্ষাকে ধারণ করে মাইজভান্ডারী তরিকা প্রচারের সূচনা হয়। হযরত মওলানা সৈয়দ দেলাওর হোসাইন মাইজভান্ডারী (কঃ) বলেন, “ এই ত্রিবিধ বেলায়তী ধারা ,নবুয়তী ধারার সমন্বয়ে অর্থাৎ জাহের বাতেন তা’লীমে এরশাদী সহ শরীয়ত ,তরীকত ,হাকীকত ও মায়ারেফত প্রভাবে ও সংমিশ্রেণে মাইজভান্ডারী তরীকারূপ মহা সাগরের উৎপত্তি।” মাইজভান্ডারী তরিকার বৈশিষ্ট্যঃ এই তরিকা ছিলছিলার দৃষ্টিকোণে কাদেরীয়া তরিকার সাথে সম্পর্কিত। অন্যান্য তরিকার আধ্যাত্মিক বৈশিষ্ট্যগুলো মাইজভান্ডারী তরিকায় সন্নিবেশিত হয়েছে। এই তরিকা কোরান ও হাদিসের শিক্ষাকে পরিপূর্ণভাবে অনুসরণ করে। একই সাথে এই তরিকা অসাম্প্রদায়িক ,উদার,নৈতিক ধর্ম-প্রাধান্যসম্পন্ন,শ্রেণি-বৈষম্যহীন ও মানবদরদী। মানুষের মনে ঐশী প্রেম জাগ্রত করে সুন্দর ও ন্যায়ের পথে জীবন যাপনে মানব সমাজকে উদ্বুদ্ধ করে মানবতার ইহকালীন ও পরকালীন মুক্তি ও কল্যাণ নিশ্চিত করার শিক্ষা ও দীক্ষা দেয়।

হযরত গাউছুল আজম মাইজভান্ডারী (কঃ) -এঁর উত্তরাধিকারীঃ হযরত গাউছুল আজম মাইজভান্ডারী (কঃ) তাঁর ওফাতের পূর্বে আপন নাতি হযরত মওলানা সৈয়দ দেলাওর হোসাইন মাইজভান্ডারীকে (কঃ)বালেগ ঘোষণা করে মাইজভান্ডার দরবার শরীফে তাঁর গদীর আধ্যাত্মিক উত্তরাধিকারী নির্ধারণ করে যান। হযরত কেবলা (কঃ) এই প্রসঙ্গে বলেন, “আমার ‘দেলাময়না’ বালেগ। দেলাময়নাই আমার গদীতে বসবে।”
মাইজভান্ডার দরবার শরীফে বর্তমান পীরে তরিকত ও সাজ্জাদানশীনঃ খেলাফত প্রদানপূর্বক সাজ্জাদানশীন মনোনয়নের মাধ্যমে গাউছিয়ত জারি রাখার নিয়মের অনুসরণে হযরত মওলানা সৈয়দ দেলাওর হোসাইন মাইজভান্ডারী (কঃ) তাঁর জীবিতাবস্থায় তদীয় তৃতীয় পুত্র হযরত মাওলানা শাহ্‌ সুফি সৈয়দ এমদাদুল হক (মঃ) কে নিজ গদীর উত্তরাধিকারী ও মাইজভান্ডার দরবার শরীফের সাজ্জাদানশীন সাব্যস্ত করে যান। তিনি মাওলানা শাহ্‌ সুফি সৈয়দ এমদাদুল হক (মঃ) কে সাজ্জাদানশীনের দায়িত্ব অর্পণের বিষয়টি ‘জরুরী বিজ্ঞপ্তি’ প্রকাশ ও তাঁর লিখিত ‘মানব সভ্যতা’ নামক বইয়ের ভূমিকাংশে উল্লেখের মাধ্যমে প্রামাণ্যকরণ করেন। ‘মানব সভ্যতা’ বইয়ের ভূমিকাংশে তিনি উল্লেখ করেন, “অত্র বইটি আমার জীবন সায়াহ্নে ছাপাইয়া যাইতে পারিব কিনা ভবিতব্য খোদাই তাহা ভাল জানেন। তাই বইটি ছাপাইবার জন্য আমাদের প্রচলিত ‘আঞ্জুমানে মোত্তাবেয়ীনে গাউছে মাইজভান্ডারী ’ সমাজ-সংস্কার ও নৈতিক উন্নয়নমূলক সমাজ সংগঠক পদ্ধতির সফলতার উদ্দেশ্যে হানেফী মজহাব এজমা ফতোয়ার ভিত্তিতে আমি যেইভাবে কামেল অলীউল্লাহর নির্দেশিত গদীর সাজ্জাদানশীন সাব্যস্ত তদ্‌মতে আমার ছেলেদের মধ্যে যোগ্যতম সৈয়দ এমদাদুল হক মিঞাকে ‘সাজ্জাদানশীন’ মনোনীত করিবার পর এই গ্রন্থটি তাহার হস্তে অর্পণ করিলাম। ”

মাইজভান্ডারী তরিকার অনুসারীদের প্রতি বর্তমান সাজ্জাদানশীনগণণও আধ্যাত্মিক সাধনায় সফলতা লাভের জন্য শরীয়তের পূর্ণাঙ্গ অনুসরণের প্রয়োজনীয়তার উপর জোরারোপ করেন। ইসলামী সভ্যতার বিকাশে সুফিবাদের অবদান অনস্বীকার্য। যুগ যুগ ধরে সুফি তরিকাসমূহ ইসলামী চরিত্র গড়ার এক একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় মাইজভান্ডারী তরিকা জনসমাজকে ধর্মের মূল সৌন্দর্য অবলোকন করে এর অন্তর্নিহিত শক্তির সাথে সম্পর্কযুক্ত করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।

মাইজভান্ডারী তরিকার উসুলে সাবআ বা সপ্ত পদ্ধতিঃ
______________________________________
নফ্‌ছে ইনসানীর কুপ্রবৃত্তি বন্ধ করে রূহে ইনসানীর সুপ্রবৃত্তি জাগ্রত করার জন্য হযরত গাউছুল আজম মাইজভান্ডারী (কঃ) নির্বিঘ্ন ও সহজসাধ্য মাধ্যম হিসেবে সপ্ত-পদ্ধতির প্রবর্তন করেন। সপ্ত -পদ্ধতি দুই স্তরে অনুশীলিত হয়।
ফানায়ে ছালাছা বা রিপুর ত্রিবিধ বিনাশ স্তরঃ 
১। ফানা আনিল খাল্কঃ পরমুখাপেক্ষী না হয়ে স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করা। 
২। ফানা আনিল হাওয়াঃ অনর্থক কাজকর্ম ও কথাবার্তা হতে বিরত থাকা। 
৩। ফানা আনিল এরাদাঃ নিজ ইচ্ছা বাসনাকে খোদার ইচ্ছায় বিলীন করে তাছলিম ও রজা অর্জন করা।
মাউতে আরবা বা প্রবৃত্তির চতুর্বিধ মৃত্যুঃ 
১। মউতে আবয়্যাজ বা সাদা মৃত্যুঃ উপবাস ও সংযমের মাধ্যমে অর্জিত এই মৃত্যুতে মানব মনে উজ্জ্বলতা ও আলো দেখা দেয়। 
২। মউতে আছওয়াদ বা কালো মৃত্যুঃ সমালোচনায় বিরক্ত বা রাগান্বিত না হয়ে আত্মসমালোচনার মাধ্যমে নিজকে সংশোধনের মনমানসিকতা অর্জনই কালো মৃত্যু।
৩। মউতে আহমর বা লাল মৃত্যুঃ কামস্পৃহা ও লোভ-লালসা হতে মুক্তিতে হাসিল হয়।
৪। মউতে আখজার বা সবুজ মৃত্যুঃ নির্বিলাস জীবন যাপনে অভ্যস্ত হওয়ার মাধ্যমে সবুজ মৃত্যু লাভ হয়।
এই কোরআনী হেদায়তের সপ্তপদ্ধতি ,মানবজীবনের এক নিখুত সহজ, সরল ও স্বাভাবিক পন্থা; যা মানব জীবন পদ্ধতিতে স্বাচ্ছন্দ্য আনয়ন করে।

তথ্যসূত্র:-
 ফার্সী গ্রন্থ: আয়নায়ে বারী, লেখক: আব্দুল গণি কাঞ্চনপুরী, বইয়ে দেয়া তারিখ মোতাবেক লেখা শেষ হয়: ১৪ই জমাদিউস্ সানি, ১৩৩০ হিঃ (১৯০৯/১০ইঃ), ২য় প্রকাশকাল: ৩০শে আগষ্ট, ২০০৭
 বাংলা গীতিকাব্য গ্রন্থ: ওফাত নামা, লেখক: আমিনুল হক হারবাঙ্গিরী, প্রকাশকাল: ১৯০৭, বর্তমানে মূল কপি কেবল মাত্র চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরীতে সংরক্ষিত রয়েছে।
 আরবী ও ফার্সী ভাষায় সমন্বিত গ্রন্থ: তোহফাতুল আখইয়ার ফী দাফ-ই-শারারাতিল আশরার, ১ম প্রকাশকাল: ১৩১৩ বঙ্গাব্দ, ১৯০৭ খৃষ্টাব্দ, লেখক: আমিনুল হক ফরহাদাবাদী, বঙ্গানুবাদ: সৈয়দ ফয়জুল ইসলাম ফরহাদাবাদী।
 "গবেষণা গ্রন্থ: এ ছুফি মুভমেন্ট ইন বাংলাদেশ: মাইজভান্ডারী তরীকা এন্ড ইটস্ ফলোয়ার্স (A Sufi Movement in Bangladesh: Maizbhanderi tariqa and its followers), লেখক: পিটার জে. র্ব্যাটচ্চি (Peter J. Bertocci), ওকলাহোমা ইউনিভার্সিটি, মিশিগান, ইউএসএ"।
 নিয়মিত প্রকাশনা: নকশার সন্ধানে, চতুর্থ সংখ্যা, প্রকাশকাল: ৫ জুন ২০০১ খৃঃ, শিরোনাম: গাউছুল আজম শব্দের তাৎপর্য ও ব্যবহার, লেখক: সৈয়দ আহমদুল হক, সভাপতি, আল্লামা রুমি সোসাইটি
 মাইজভান্ডারী তরীকার দর্শন বিশ্লেষণাত্বক তাত্ত্বিক বাংলা গ্রন্থ: বেলায়তে মোতলাকা, লেখক: সৈয়দ দেলোয়ার হোসাইন মাইজভান্ডারী, ৩য় সংস্করণ: ১৯৭৪।
 "ইংরেজী গবেষণা গ্রন্থ: Sufism and Saint Veneration in Contemporary Bangladesh: The Maijbhandaris of Chittagong (Routledge Advances in South Asian Studies), লেখক: হেনস্ হার্ডার, হাইডেল বার্গ বিশ্ববিদ্যালয়, জার্মানী (Hans Harder, Head of Department of Modern South Asian Languages and Literatures, Heidelberg University)"।
 মাইজভান্ডারী তরীকার ইতিহাস নির্ভর তাত্ত্বিক বাংলা গ্রন্থ: এলাকার রেনেসাঁর যুগের একটি দিক, লেখক: সৈয়দ দেলোয়ার হোসাইন মাইজভান্ডারী, প্রকাশকাল: ১৯৭৪।
 মাইজভান্ডারী তরীকার ইতিহাস নির্ভর বাংলা জীবনী গ্রন্থ: গাউছুল আজম মাইজভান্ডারীর জীবনী ও কেরামত, লেখক: সৈয়দ দেলোয়ার হোসাইন মাইজভান্ডারী, ১ম প্রকাশ: ১৯৬৭।
 রাহে ভান্ডার তরীকার মুখপত্র নিয়মিত ম্যাগাজিন: নকশার সন্ধানে, তালিকা প্রকাশ: ৮ম সংখ্যা।
 স্মারক গ্রন্থঃ গাউছুল আজম মাইজভান্ডারীর ওফাত শতবার্ষিকী ১৯০৬-২০০৬, প্রকাশকাল:২০০৬।

No comments:

Post a Comment

URS MUBARAK -SUFISM - BANGLADESH

Holy Urs Mubarak #Urs #UrsMubarak #UrsSharif #Sufi #SufiLive #SufiWorld #SufiFestival #SufiCentre #SufiOrder #SufiMedia #World #Global #Glo...